ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে নিয়ামতপুরে বটতলী গরুর হাট” জমে উঠেছে
এম,এ,মান্নান,নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
ঈদ-উল-আযহা মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব।এই উৎসবকে কেন্দ্র করে সারা দেশে কোরবানির পশু কেনাবেচার জন্য গরুর হাট বসে। নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার বিখ্যাত বটতলী গরুর হাট ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে বিশেষভাবে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।এই হাটে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গরু আসে এবং হাজার হাজার মানুষ এই হাটে গরু কিনতে ও বিক্রি করতে আসেন।বটতলী গরুর হাট প্রতিবছর ঈদের এক মাস আগে থেকেই জমে উঠতে শুরু করে। হাট কমিটি বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং গরু রাখার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা, পানির ব্যবস্থা, চিকিৎসা সুবিধা ও বিশ্রামাগার প্রস্তুত করে। হাটে প্রবেশ ও নির্গমনের জন্য আলাদা গেট থাকে এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশ ও আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।এই হাটে স্থানীয় খামারিরা ছাড়াও বিভিন্ন গ্রাম ব্যাপারীরা গরু নিয়ে আসেন। ছোট, মাঝারি ও বড় আকারের দেশি-বিদেশি নানা জাতের গরু পাওয়া যায়।কেউ আনে ফ্রিজিয়ান জাতের, কেউ সাদা বকনা, আবার কেউ দেশি ষাঁড়।দামও রকমভেদে হয় ৩০ হাজার থেকে শুরু করে কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত গরু বিক্রি হয়।হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে চলে দর-কষাকষি।কেউ একবার দেখে চলে যায়, আবার কেউ ঘুরে ফিরে একাধিক গরু দেখে কিনে।বিক্রেতারা গরুর খাদ্যাভ্যাস, স্বাস্থ্য এবং বড় হওয়ার কৌশল বর্ণনা করে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন।অনেকে গরু কিনে সাথে সাথে বাড়ি নিয়ে যান, কেউবা আবার কয়েকদিন হাটে রেখে পরে নিয়ে যান।এই গরুর হাট শুধু কোরবানির পশু বিক্রির জায়গা নয়, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কার্যক্রমও বটে।স্থানীয় খামারি, ব্যাপারী, শ্রমিক, পরিবহনকর্মীসহ অনেক মানুষ এই হাট কেন্দ্র করে জীবিকা নির্বাহ করেন।এ ছাড়াও হাট এলাকায় ছোটখাটো দোকান, খাবারের হোটেল, পশুখাদ্যের দোকান, খেলনার দোকানসহ নানা ব্যবসা গড়ে ওঠে।তবে হাটে কিছু সমস্যা দেখা দেয় — যেমন অতিরিক্ত ভিড়, যানজট, গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার অভাব ইত্যাদি।এসব সমস্যা মোকাবেলায় প্রশাসনের তদারকি, হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির সক্রিয়তা এবং সচেতনতা জরুরি।নিয়ামতপুরের বটতলী গরুর হাট ঈদ-উল-আযহাকে ঘিরে এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।এটি কেবল কোরবানির পশু কেনাবেচার হাট নয়, বরং এটি স্থানীয় অর্থনীতির চাকা সচল রাখে এবং ঈদকে ঘিরে মানুষের আনন্দ-বেদনার অংশ হয়ে ওঠে।সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও সচেতনতার মাধ্যমে এই হাট আরও কার্যকর ও নিরাপদ হতে পারে।