রইজ উদ্দিন, দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ
বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় যাচ্ছে বিজয়নগরের সুস্বাদু লিচু।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে রয়েছে লিচু বাগান। এখন মৌসুমী ফল লিচুর সময়,উপজেলার বিভিন্ন হাট, বাজারে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন জাতের লিচু, এবার লিচুর ফলনও বেশ ভাল হয়েছে। ফলন যেমন ভালো হয়েছে, দামও ভালো পাওয়ায় খুশি লিচু চাষিরা।
বিজয়নগর উপজেলায় দেশি জাতের পাটনায় লিচু বাজারে এসেছে ১৫/২০ দিন হয়। এখন বাজারে আসাবে উন্নত জাতের বোম্বে ও চায়না-থ্রি লিচু ।
বিজয়নগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কিছু কিছু বাড়ির আঙ্গীনা পাকা লিচুর রঙে রঙিন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে লিচু বাগান। বাগানের গাছে গাছে রয়েছে পাকাঁ আাদা পাকা লিচুর থোকা। ব্যবসায়ীরা বাগান থেকে লিচু কিনে ঝুড়িতে ভরে নিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলার হাট – বাজারে। অপর দিকে লিচু ঝুড়িতে সাজিয়ে বাগানিরা ও ব্যবসায়ীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন উপজেলার হাট – বাজারে বিক্রি হচ্ছে বিজয়নগরের লিচু । প্রথমে
বিজয়নগরে কিছু শৌখিন মানুষ বাড়ির আঙিনায় লিচুর চাষ শুরু করেন। এই উপজেলায় রয়েছে বিভিন্ন ফলের গাছগাছালি ও বাগান। অন্য ফলের তুলনায় বেশি লাভ হওয়ায় মানুষ লিচু চাষ শুরু করেছে। গড়ে উঠেছে লিচুর বাগান। বাড়ির আঙিনা, রাস্তার পাশে, মাঠে-ময়দানে শুরু করছে লিচুর চাষ।
উপজেলার পাহাড়পুর, বিষ্ণুপুর, সিঙ্গারবিল, পত্তন, চম্পকনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্হানে লিচুর চাষ হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে
লিচু চাষিদের সঙ্গে আলাপ করলে লিচু চাষিরা জানায়,লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। লিচু ভাঙার শুরু থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে ব্যবসায়ীরা বিজয়নগরের লিচুর হাট আউলিয়া বাজার, মেরাশানি বাজার, সিঙ্গারবিল বাজার থেকে লিচু ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে ।
ব্যবসায়ীরা বলেন, এ বছর প্রতি হাজার লিচু বাগান থেকে ক্রয় করতে হচ্ছে ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকায়। শ্রমিকের খরচ ও পরিবহন খরচ মিলিয়ে আমাদের বাজারে লিচু পৌঁছাতে প্রতি হাজার লিচুতে খরচ হয়,১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত। যার ফলে আমাদের বাজারে প্রায় ৪ হাজার টাকার কমে আমরা লিচু বিক্রি করতে পারছি না।
লিচু চাষী ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিজয়নগরে সাধারণত তিন জাতের লিচুর ফলন ভালো হয়। এগুলো হলো পাটনায় বা দেশি লিচু, বোম্বাই ও চায়না-৩। এ ছাড়াও বেদেনা, চায়না-১ ও চায়না-২ জাতের লিচু চাষ হয় । সবার আগে বাজারে আসে পাটনায় বা দেশি লিচু। তারপরই বাজারে আসে বোম্বাই ও চায়না-৩ লিচু কিন্তু পরে বাজারে আসলেও এর কদর যেমন বেশি দামও তেমন বেশি। চায়না লিচু দেশি লিচুর মতো দেখা গেলেও খেতে সুস্বাদু।
উপজেলার লিচু চাষিরা জানান, তাদের বাগানর সব গাছে একরকম ফলন হয়নি। তবু আমরা খুশি দাম ভালো হওয়ায়।
লিচুর চাষ ও ফলন বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ জিয়াউল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বর্তমানে বিজয়নগর উপজেলায় প্রায় ৬৩০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৪৪০ হেক্টর জমিতে ফলন্ত গাছ রয়েছে । যা থেকে প্রায় ১৭০০ মেট্রিক টন লিচুর বাজার মূল্য হতে পারে প্রায় ২৫ কোটি টাকা।
কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, বিজয়নগর- কৃষিতে সম্ভবনাময় একটি উপজেলা, এখানে সবধরনের ফল ও সবজি চাষ হচ্ছে যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ নিয়ে কৃষি বিভাগ মাঠ পর্যায়ে গুরুত্বের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আশা করি আগামীতে বিজয়নগর উপজেলার লিচু বিদেশে রপ্তানির উপযুক্ত হওয়ার আশা প্রকাশ করেন
বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় যাচ্ছে বিজয়নগরের সুস্বাদু লিচু।