এম,এ,মান্নান, দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ
বাংলাদেশ একটি কৃষিনির্ভর দেশ। দেশের অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। কৃষকের ঘরে ফসল মানেই দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়া। তবে কখনো কখনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ কৃষকের পরিশ্রমের ফল নষ্ট করে দেয়।
সম্প্রতি নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলায় এমনই এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিয়েছে—অতিবৃষ্টি।বোরো মৌসুমে যখন কৃষকরা ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখনই হঠাৎ করে শুরু হয় অকালবৃষ্টি ও অতিবৃষ্টি। এই বৃষ্টির ফলে নিম্নাঞ্চলের জমিগুলোতে পানি জমে যায় এবং ধান গাছ পানিতে ডুবে যায়।
ফলে একদিকে যেমন ধান কাটতে সমস্যা হচ্ছে, অন্যদিকে কাটা ধান শুকিয়ে ঘরে তোলাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে ধানের গুণগতমান নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পচে যাওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
এছাড়াও শ্রমিক সংকট কৃষকদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। অতিবৃষ্টির কারণে বাহিরের জেলা থেকে শ্রমিক আনাও কঠিন হয়ে পড়েছে। যারা স্থানীয়ভাবে কাজ করছেন, তারাও বৃষ্টির কারণে স্বাভাবিকভাবে কাজ চালিয়ে যেতে পারছেন না। কৃষকদের অনেকেই বলছেন, সময়মতো ধান ঘরে তুলতে না পারলে তারা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
এই পরিস্থিতিতে কৃষি বিভাগ ও সরকারকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক সহায়তা, ধান কাটার জন্য যন্ত্রপাতি সরবরাহ এবং শ্রমিক সহযোগিতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আগাম প্রস্তুতির জন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে।
পরিশেষে বলা যায়, কৃষক আমাদের দেশের চালিকাশক্তি। তাদের রক্ষা করা মানেই দেশের খাদ্যনিরাপত্তা রক্ষা করা। অতিবৃষ্টির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।