বিশেষ প্রতিবেদক,কক্সবাজার:
টেকনাফে অপহরণ কারীদের আস্তানায় বিজিবি’র বিশেষ অভিযানে ১৪ জন ভিকটিম উদ্ধার করা হয়েছে।
গত কাল ১০মে ২০২৫ ইং রাত সাড়ে ১১টায় টেকনাফ ২বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আশিকুর রহমান (পিএসসি) এর নেতৃত্বে একটি বিশেষ টহল দল টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লম্বরী এলাকায় কুখ্যাত মানব পাচারকারী চক্রের মূলহোতা মৃত হাফেজ আহমদের পুত্র মোঃ সাইফুল ইসলাম (৩৯) এর গোপন আস্তানায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ১৪ জন অপহৃত বাংলাদেশী নাগরিককে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে।
অপহৃতরা বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার বাসিন্দা। এ সময় ভুক্ত ভোগীদের কাছ থেকে জানা যায় যে, চক্রটি দালালদের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তাদেরকে টেকনাফে নিয়ে আসে। পরে সুযোগ বুঝে টেকনাফ ও মেরিন ড্রাইভের বিভিন্ন স্থান হতে তাদেরকে অপহরণ করে দুর্গম লুকায়িত স্থানে আটকে রাখা হয়েছিল। তারপর থেকেই, অপহরণকারীরা ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ দাবি করে আসছিল।
এছাড়াও, মুক্তিপন আদায়ে অপহরণকারী চক্রটি ভুক্তভোগীদের উপর অমানবিক শারীরিক নির্যাতনও করেছে। অত্যাচারের এ সকল অমানবিক ভিডিও চিত্র ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছে পাঠিয়ে মুক্তিপণের টাকা দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হতো।
উল্লেখ্য, গত ২৪ এপ্রিল ২০২৫ ইং গভীর সাগর দিয়ে মায়ানমার হতে বাংলাদেশে মানব পাচারকালে মোঃ সাইফুল ইসলামসহ পাচারকারী চক্রের সদস্যদের আটক করতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় টহলদল তাদের চ্যালেঞ্জ করলে তারা দ্রুত পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়, তবে ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
পাচারকারীদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হলেও, পরবর্তী সময়ে তাদের বিরুদ্ধে ২৪ এপ্রিল ২০২৫ ইং টেকনাফ মডেল থানায় একটি মানব ও মাদক পাচারের দায়ে মামলা দায়ের করা হয়।
উক্ত অভিযানে উদ্ধারকৃত ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তের পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে মানব পাচারকারীদের গ্রেপ্তারে মেরিন ড্রাইভ সড়ক এবং দমদমিয়া এলাকায় বেশ কিছু অভিযান পরিচালনা করা হয়। এইসকল অভিযানের সূত্র ধরে জানা যায় যে, মানব পাচারকারী চক্রটি টেকনাফ সদর ইউপির দক্ষিণ লম্বরী এলাকায় সম্প্রতি বেশ কিছু বাংলাদেশী নাগরিককে অপহরণ করে গোপন স্থানে জিম্মি করে রেখেছে।
অধিনায়ক জানান, কুখ্যাত অপরাধী চক্রটির সদস্যদের গ্রেপ্তারে বিশেষ অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং উদ্ধারকৃত ভুক্তভোগীদের পরিবারের নিকট হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।