শাকিল হোসেন শওকত, দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নর খামারধল্লা গ্রামের তামাক খেত থেকে অজ্ঞাত ১ মহিলার লাশ উদ্ধার করে নাগরপুর থানা পুলিশ।
গত ১২ মার্চ ২০২৫ নুরজাহান বেগম (৬৫) এর লাশ খামার ধল্লা গ্রামের রতনের তামাক খেত থেকে উদ্ধার করে থানা পুলিশ। পরে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হয়।
নাগরপুর থানা পুলিশের কাছে গ্রেপ্তারকৃত কালামের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ জানায়, নুরজাহান বেগম(৬৫) উপজেলার খামার ধল্লা গ্রামের মৃত গনি মিয়ার স্ত্রী। তার জীবন যাত্রার মান নিম্নমানের, সে নিঃসন্তান এবং স্বামী নেই, অন্যের জমিতে গম এবং ধান কাটার পরে যে পড়ে থাকা শস্য থাকে তা কুরিয়ে কোন রকমে জীবন যাপন করতো। তার ৩০-৩৫ শতাংশ জমি আছে এই জমি অত্র এলাকার মেম্বার তোফায়েল হোসেন তোফা আত্মসাথ করার জন্য দির্ঘ্যদিন যাবত পায়তারা করে আসছিলো। অনেক চেষ্টা করার পর যখন তার জমি নিতে ব্যার্থ হয়ওয়ায়, তোফার মনের ভিতর আক্রোশ জন্মে। আর তখন কালাম নামের এক লোককে ভাড়া করে নৃসংশ হত্যাকান্ড ঘটায়।
গত ১২ মার্চ নুরজাহান বেগম (৬৫) খামার ধল্লা চকে ভুট্টা, গম, পায়রার শিষ কুড়ানোর জন্য যায়। সন্ধ্যা হওয়ার পরেও নূরজাহান বাড়ীতে না ফেরায় পাশের বাড়ীর লোকজন আশ পাশে খোঁজাখুজির একপর্যায়ে রাত অনুমানিক ৮.৩০ মিনিটের সময় উপজেলার খামার ধল্লা চকে রতন এর তামাক ক্ষেতের ভিতর নুরজাহান বেগমকে পড়ে থাকা অবস্থায় দেখতে পান। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করে, অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত কর্তৃক আক্রান্ত হয়ে তিনি হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন।
নাগরপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি)মোঃ রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন,
ক্লুলেস এই হত্যাকান্ডটি সংঘটিত হওয়ার পরই টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান এর প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় ও সার্বিক তত্তাবধায়নে নাগরপুর থানার একটি চৌকস টিম এই নৃশংস হত্যাকান্ডের নিবীড় তদন্ত শুরু করে। নুরজাহানের ভাইপো মোঃ দুলাল মিয়া (৩৫) বাদী হয়ে থানায় অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে এজাহার দাখিল করলে নাগরপুর থানার মামলা নম্বর- ০৭, তারিখ- ১৩ মার্চ ২০২৫ খ্রি., ধারা- ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়। মামলার রহস্য উদঘাটন করার জন্য তথ্য প্রযুক্তির পাশাপাশি বিষয়সমূহ পর্যালোচনা করা হয়। তদন্তকালে প্রযুক্তির সহায়তায় মো: কালাম মিয়া (৩৮) ঢাকা যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেফতার করে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
কালাম মিয়া বগুড়া জেলার শারিয়াকান্দি থানার গণকপাড়া গ্রামের আফতাব মোল্লার ছেলে। জিজ্ঞাসবাদকালে গ্রেফতারকৃত মো: কালাম মিয়া (৩৮) নুরজাহান বেগম (৬৫) হত্যার কথা স্বীকার করে এবং তোফায়েল হোসেন তোফার জড়িত থাকার বিষয়টি জানায়। বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারি কা. বি. এর ১৬৪ ধারা অনুযায়ী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনায় জড়িত মোঃ তোফায়েল হোসেন ওরফে তোফা মেম্বার (৪২)কে নাগরপুর থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করা হয়।
তোফায়েল হোসেন তোফা মেম্বার উপজেলার মামুদনগর ইউনিয়নের বর্তমান ইউপি সদস্য, বাঘের বাড়ি গ্রামের দুদু মিয়ার ছেলে।
ওসি আরও জানান, মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন আছে। প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য প্রমাণের উপর ভিত্তি করে মামলার তদন্ত কার্যক্রম সমাপ্তকরত পরবর্তীতে পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করা হবে।