স্টাফ রিপোর্টা
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)-তে কর্মরত আউটসোর্সিং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জীবন যেন আধুনিক দাসত্বের নির্মম প্রতিচ্ছবি। প্রায় ২০০০ জন আউটসোর্সিং সিএসএস ও ডিএসএসের কর্মী দীর্ঘদিন ধরে ডিপিডিসিতে কাজ করছেন কোনো চাকরির নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা ছাড়াই। এদের জীবনে নেই কোনো স্থায়ীত্ব, নেই ন্যায্য অধিকার।
আউটসোর্সিং মডেলে নিয়োজিত এসব কর্মীরা দিনের পর দিন কঠিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। অথচ তাঁদের প্রাপ্য সম্মান ও ন্যায্য পারিশ্রমিক থেকে তারা বঞ্চিত। উদাহরণস্বরূপ, যেখানে একজন স্থায়ী মিটার পাঠকের মোট বেতন আনুমানিক ৬০,০০০ টাকা, সেখানে আউটসোর্সিং কর্মীরা সেই একই দায়িত্ব পালন করেও পাচ্ছেন মাত্র ৬,০০০ থেকে ৭,০০০ টাকা। এই টাকার অপ্রতুলতায় তাদের জীবন চলছে অভাব-অনটনের অন্ধকার গলিপথে।
আউটসোর্সিং পদ্ধতির সবচেয়ে নির্মম দিক হলো—যেকোনো সময় চাকরি হারানোর আতঙ্ক। সামান্য বেতন বাড়ানোর বা কাজের পরিবেশ উন্নতির দাবিও যেন অপরাধ। অভিযোগ জানালে ঠিকাদাররা মুহূর্তেই ছাঁটাইয়ের হুমকি দেন, ফলে কর্মীরা মুখ বুজে অন্যায় সহ্য করতে বাধ্য হন।
বর্তমান সমাজব্যবস্থায় যেখানে ন্যায্য মজুরি ও শ্রমিক অধিকার নিয়ে এত কথা বলা হয়, সেখানে ডিপিডিসির মত একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে আধুনিক দাসত্বের এই করুণ চিত্র অত্যন্ত দুঃখজনক ও ন্যক্কারজনক। প্রশ্ন থেকেই যায়—এই অবস্থা থেকে আউটসোর্সিং কর্মচারীরা কবে মুক্তি পাবে? তাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় কবে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে?
ডিপিডিসির কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে হয়, এখনই সময় আউটসোর্সিং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে তাদের জন্য স্থায়ী নিয়োগ, ন্যায্য বেতন ও কাজের নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করার।
তাদের প্রতি অবিচার চলতে থাকলে একদিন এর গোপন ক্ষোভ ভয়াবহ রূপ নিতে পারে—যার দায়ভার কাউকেই এড়ানো সম্ভব হবে না।