মোঃ আবদাল মিয়া, দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ১০নং নাজিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদে শীতকালীন সরকারি বরাদ্দকৃত কম্বল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা দিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন আহমদ। তিনি জানান, বিতরণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রেখে তালিকা অনুযায়ী প্রকৃত শীতার্তদের হাতে শীতবস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি পরিষদের একজন ইউপি সদস্যের মাধ্যমে অভিযোগ উঠে শীতকালীন বরাদ্দ পাওয়া কম্বল ইউনিয়ন পরিষদ অফিসের একটি কক্ষে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে রয়েছে। শীতকাল শেষ হয়ে গেলেও বিতরণ করা হয়নি। কেউ কেউ দাবি করেন, এসব কম্বল চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন নিজস্বভাবে বাছাইকৃত কিছু লোকের মধ্যে বিতরণ করছেন।
এব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ রণজিৎ সরকার বলেন, বিষয়টি প্রতিহিংসাবশত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রটানো হয়েছে। চেয়ারম্যানের উপর বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।
এলাকার ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, আপদকালীন সময়ে দেওয়ার জন্য ১৮টি কম্বল ইউপি সদস্যদের রোমে প্রকাশ্য রাখা হয়েছে। এটা গোপনীয় কোন বিষয় নয়।
৩নং ওয়ার্ডের ৭ বারের নির্বাচিত মেম্বার ফখরউদ্দিন বলেন, আমাদের ইউনিয়নে চেয়ারম্যান কোন সিন্ধান্ত নেওয়ার আগে পরিষদের মেম্বারগণের মতামত নিয়ে সিন্ধান্ত নেন এবং তাঁহার কাজ স্বচ্ছভাবে করেন। এটি জনৈক মেম্বার নিজ স্বার্থের জন্য ইউনিয়ন অফিসের সুনাম ক্ষুন্ন করছেন। বিষয়টি দু:খজনক।
২নং ওয়ার্ডর ইউপি সদস্য সোহেল আহমেদ বলেন, এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বশত বদনাম রটানো হয়েছে। শীতকালান ১৮টি কম্বল বিতরন করা হয়নি। কম্বলের মুল্য না হয় ১৮ শত টাকা হবে। আর তা আত্মসাৎ করা হয়নি। সকল ইউনিয়ন সদস্যের জানামতে জরুরী মুহুর্তে কাজে লাগানোর জন্য ইউনিয়ন অফিসে রাখা হয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদের ৩ বারের নির্বাচিত মেম্বার ও সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ আরফান বলেন, চেয়ারম্যান বিতরণ শেষে ইউপি সদস্যদের জানামতে সদস্যদের রোমে প্রকাশ্যে ১৮টি কম্বল রেখেছেন। এটা তো তার বাড়িতে নেননি বা ব্যক্তিগত কাউকে দেননি। একজন মেম্বার ব্যক্তি আক্রোশে বিষয়টি রটিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন বলেন, আমরা ২১০টি কম্বল বিতরণের জন্য পাই। সবসময় চেষ্টা করি সরকারের দেওয়া সহায়তা যথা সময়ে সঠিক মানুষের হাতে পৌঁছাতে। তালিকা অনুযায়ী প্রতিটি ওয়ার্ডে যাচাই-বাছাই করে কম্বল বিতরণ করেছি। এছাড়াও আমি নিজ উদ্দ্যোগে শীতবস্ত্র হিসাবে ১৬শ পিস কম্বল বিতরন করি। আর এই ১৮টি কম্বল ইউপি সদস্যদের অনুমতিতে সদস্যদের কক্ষে জরুরী মুহুর্তে বিতরণের জন্য রাখা হয়েছিল। যা মাষ্টাররোলে ও স্টক লিষ্টে উল্লেখ করা হয়েছে। সরকারি সহায়তা বিতরণে স্বচ্ছতা বজায় রেখে বিতরণ কার্যক্রমে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আমি নিজেই তদারকি করি, যাতে প্রকৃত উপকারভোগীরাই এসব সুবিধা পান। জনগণের কল্যাণে কাজ করাই আমার দায়িত্ব। যারা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন, তারা আসলে ইউনিয়নের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করতে চাইছেন।
নাজিরাবাদ ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ঋষিকেশ জানান, যা বরাদ্দ পেয়েছি, তার বেশিরভাগই বিতরণ করা হয়েছে। কিছু কম্বল অফিসে রাখা রয়েছে, যা প্রয়োজন অনুসারে বিতরণ করা হবে। শুধু চেয়ারম্যানকে সমালোচিত করার জন্য এক ইউপি সদস্য বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।