শহিদুল ইসলাম খোকন, দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ
চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ছেংগারচর – শ্রীরায়েরচর পর্যন্ত আন্চলিক মহাসড়কের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ ধীরগতিতে চলায় জন দুর্ভোগ বড়েছে।
জানা যায়, ২০২০ সালের ১লা জুলাই শুরু হওয়া এই প্রকল্পটি ২০২৪ সালের ৩০ জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পটির আওতায় ২২.২০ কিলোমিটার দীর্ঘ কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি-গোয়ালমারী-শ্রীরায়েরচর হয়ে চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার বাংলা বাজার- ছেংগারচর বাজার পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়ককে উন্নত মানে ও প্রশস্ততায় রূপান্তরের কথা ছিল।
রাস্তাটি কুমিল্লা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের (এন-১) দাউদকান্দি অংশ থেকে শুরু হয়ে মতলব উত্তরের ছেংগারচর পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংযোগস্থল হওয়ায় এটি এবং ঢাকা,চট্টগ্রামসহ সারা দেশের সংযোগ রাস্তা হওয়ায় মতলববাসীর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক।
কিন্তু কাজের মেয়াদ ১ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো কাজ শেষ করা হয়নি। ফলে বেড়েছে দুর্ভোগ। দীর্ঘদিন ধরে চলমান কাজ ধীরগতির হওয়ায় রাস্তাটি এখন ধুলাবালিতে ভরপুর এবং বৃষ্টির সময় কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে। এতে পথচারী, শিক্ষার্থী, রোগী ও যানবাহন চালকদের জন্য চলাচল করতে হিমসিম হয়ে পড়ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, রাস্তায় এত ধুলা যে, জানালা খুলে বসা যায় না। ধূলায় সব নষ্ট হয়ে যায়। এই রাস্তা দিয়ে চলাচল প্রায়ই বন্ধ হওয়ার উপক্রম। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
স্থানীয় প্রশাসন এবং সড়ক বিভাগকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এলাকাবাসী। কারন, এই সড়ক শুধু মতলববাসীর নয় যোগাযোগ বরং চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাথে গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল হিসেবে জাতীয় গুরুত্ব বহন করে। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা অত্যন্ত জরুরি।
অটোরিকশা চালক মো. হাসান বলেন, এই রাস্তায় ধুলায় চোখে কিছু দেখা যায় না। গাড়ি চালাতে গেলে শরীর-মুখ ধুলায় ভরে যায়, যাত্রীরাও উঠতে চায় না।
ট্রাকচালক আলমগীর হোসেন বলেন, বৃষ্টি হলে এ রাস্তায় জিনিসপত্র নিয়ে গেলে কাদায় গাড়ি আটকে যায়। কখনো পিছলে পড়ে দুর্ঘটনাও ঘটে।
শিক্ষার্থী রিমা আক্তার জানান, প্রতিদিন স্কুলে যেতে খুব কষ্ট হয়।
এম্বুলেন্স ড্রাইবার জাকির বলেন, চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল থেকে রোগী নিয়ে ঢাকায় নিয়ে যাই। রাস্থা ভালো না থাকায় অনেক সময় রাস্তায়ই রোগী মারা যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মোবারক হোসেন বলেন, ডায়েরিয়া,শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগ ও চোখের সমস্যা নিয়ে অনেক রোগী আসছেন। রাস্তার ধুলাবালি এর বড় কারণ।
কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের এক প্রকৌশলী জানান, প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ হলেও কিছু কারিগরি জটিলতা ও বরাদ্দ সংক্রান্ত কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। ইতোমধ্যে নতুন সময়সীমা নির্ধারণ ও কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই কাজ পুরোদমে শুরু হবে।
ছেংগারচর শ্রীরায়েরচর মহাসড়কে জনজীবন পিষে যাচ্ছে ধুলা আর কাদায়।