জহিরুল ইসলাম হৃদয়, দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ
মাদারীপুরে পরকীয়া প্রেমের টানে গ্রীসপ্রবাসী স্বামীকে তালাক দিয়ে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে মারুফা আক্তার (২৩) নামে এক গৃহবধূর বিরুদ্ধে। পাল্টা অভিযোগে মারুফা তার প্রবাসী স্বামী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুক চাওয়ার অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগী নূর আলম মুন্সি (৩৮) মাদারীপুর সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের আপাসী গ্রামের করম আলী মুন্সির ছেলে।
পাঁচ বছর আগে দেশে ফিরে একই ইউনিয়নের বনগ্রাম এলাকার রহিম হাওলাদারের মেয়ে মারুফাকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন তিনি, বিয়ের কিছু মাস পর তিনি আবার গ্রীসে ফিরে যান।
প্রথম দিকে সবকিছু স্বাভাবিক থাকলেও দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার সুযোগে স্ত্রী মারুফা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন বলে দাবি করে নূর আলমের পরিবার। অভিযোগে বলা হয়, মারুফা প্রবাসে থাকা স্বামীর পাঠানো অর্থ পরকীয়া প্রেমিকের পেছনে খরচ করতেন। পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে নূর আলম সর্তক করেন স্ত্রীকে।
কিন্তু কোনো সমাধানে না এসে প্রায় তিন মাস আগে মারুফা স্বর্ণালঙ্কার, নগদ অর্থ ও মালামাল নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান।
নূর আলমের পরিবারের দাবি, মারুফা প্রায় ২৯ লাখ টাকা নিজের ও মায়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে গ্রহণ করেন, যা পরে নিজের পরিবারকে দেন। এছাড়া স্বামীর পাঠানো ৮ আনা স্বর্ণের দুল, ২ ভরি বালা, ১ ভরি গলার হার, ৬ আনা আংটি, ৮ আনার চেইন এবং নগদ ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা নিয়ে যান তিনি।
এসব নিয়ে বাড়ি ছাড়ার পর উল্টো মারুফা ও তার পরিবার ফাহিমা আক্তারসহ স্বজনদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা করেন।
নূর আলমের বোন ফাহিমা বলেন, আমার ভাই বিদেশে থাকার সময়ও তার স্ত্রীকে ভালোভাবে দেখাশোনা করতেন।
কিন্তু সে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে এবং সবকিছু নিয়ে পালিয়ে যায়।এখন আমাদের নামেও মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে।
নূর আলম বলেন, আমি বিদেশে থেকে সংসারের সব খরচ চালাতাম, এমনকি শ্বশুরবাড়িতেও। কিন্তু আমার স্ত্রী সবকিছু নিয়ে আমাকে তালাক দিয়েছে এবং মিথ্যা মামলা করেছে।
অন্যদিকে, মারুফার বাবা-মা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাদের মেয়ে কোনো পরকীয়ায় জড়িত না, বরং নূর আলম কখনও স্ত্রীর খরচ দিত না, তবে টাকা ধার নেওয়ার বিষয়ে তারা ১ লাখ টাকার কথা স্বীকার করেন।
স্থানীয় এক প্রতিবেশী বলেন, আমরা দেখেছি জামাই ভালো ছিল, কিন্তু মেয়েটা সবসময় বাবার বাড়িতে থাকতো।
এখন শুনছি তালাক দিয়ে পালিয়ে গেছে, পুলিশও কয়েকবার এসেছে তাদের বাড়িতে।
এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর মডেল থানার ওসি আদিল হোসেন বলেন, "উভয় পক্ষই অভিযোগ করেছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।