রিপোর্টার:খান মাইনুদ্দিন
বাংলাদেশের রাজপথে আজকাল এক নতুন আতঙ্ক ছড়িয়েছে, এবং সেই আতঙ্কের নাম ‘লেডি বাইকার গ্যাং’। এই গ্যাংয়ের সদস্যরা বাইক নিয়ে একেবারে বেপরোয়া গতিতে সারা দেশ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের অপ্রতিরোধ্য কার্যকলাপ এতটাই বেড়ে গেছে যে, তাদের এখন আর শুধু বাইক রাইডার হিসেবে চিহ্নিত করা যায় না—এরা হয়ে উঠেছে এক ধরনের অপরাধী সিন্ডিকেট, যারা সমাজের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে দুর্বৃত্তামির মাধ্যমে আঘাত করছে।
এই গ্যাংয়ের মূল টার্গেট হচ্ছেন দেশের নামকরা শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, এবং বড় প্রতিষ্ঠানের মালিকরা। এই শক্তিশালী সিন্ডিকেট তাদের অর্থসম্পদ ও সম্মান নষ্ট করার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এসব মালিকদের। তারা যতটা না বাইকের ওপর নির্ভরশীল, তার চেয়ে অনেক বেশি প্রতারণার পদ্ধতিতে ধ্বংসাত্মক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের মূল পদ্ধতি—তাদের ধুরন্ধরতার মাধ্যমে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ভুল তথ্য দিয়ে ফাঁসানো এবং তাদের টাকা ছিনতাই করা।
তবে সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, এই গ্যাংয়ের সদস্যরা এখন শুধুমাত্র বাইক রাইডার হিসেবেই পরিচিত নয়, তারা রাতের প্রহরী হিসেবে বিভিন্ন নামিদামি হোটেল ও বিলাসবহুল পরিবেশে কাটায়। দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া তাদের গ্যাং-সংগঠনগুলির অস্তিত্ব এখন কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, কুমিল্লা, ঢাকা—এমনকি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রতিটি জেলা, প্রত্যেকটি এলাকায় তারা তাদের অবৈধ কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে, এবং তাদের নেতারা একে একে নিজেদের বিলাসী জীবনধারা চালিয়ে যাচ্ছে।
গ্যাংয়ের সদস্যরা বাইক দিয়ে তাদের অভিযান চালালেও, তাদের কার্যকলাপ একেবারে নিখুঁত। তারা শহরের বাইরে বেরিয়ে বিভিন্ন হোটেল বা বিলাসবহুল স্থানে বসে পরিসংখ্যান অনুযায়ী বড় ব্যবসায়ীদের সাথে প্রতারণার পথ অনুসরণ করছে। তাদের এই অপরাধী সিন্ডিকেট এখন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই পরিস্থিতি সমাজের প্রতিটি স্তরের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে সমাজের অস্থিরতা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপের প্রয়োজন, যাতে এই লেডি বাইকার গ্যাংয়ের কার্যকলাপ বন্ধ করা সম্ভব হয়।
এটা স্পষ্ট, যে এই গ্যাংটির অনুপ্রবেশ দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে এবং আগামী দিনে এই ধরনের অপরাধী সিন্ডিকেটের বৃদ্ধি বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য বড় ঝুঁকি হয়ে উঠতে পারে।