মোঃ জান্নাতুল নাঈম বগুড়া শিবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র অজ্ঞাত ব্যক্তিরা মহাস্থান জাদুঘরে প্রবেশ নিয়ে নিরাপত্তা কর্মীকে মারধর ও কাস্টোডিয়ান রাজিয়া সুলতানাকে হুমকি ধামকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় বুধবার (২৬ মার্চ) দুপুরে শিবগঞ্জ থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে জিডি করেন রাজিয়া সুলতানা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর,সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক পবিত্র রমজান মাসে মহাস্থান জাদুঘর ও মহাস্থান প্রত্নস্থল সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকে। সেই অনুযায়ী গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টায় মহাস্থান জাদুঘরসহ জাহাজঘাটা ও গোবিন্দভিটা প্রত্নস্থল বন্ধ হয়ে যায়। জাহাজঘাটা বন্ধ হওয়া ৩০ মিনিট পর বিকাল ৫টার সময় জাতীয় নাগরিক পার্টি (NCP) এর পরিচয়ে সেই সময় ২০ থেকে ২৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা জাহাজঘাটার মূল ফটকে আসেন।
এবং ভিতরে প্রবেশ করার জন্য কাস্টোডিয়ান রাজিয়া সুলতানার কাছে ফোন করেন এবং জাহাজঘাটা প্রবেশের জন্য অনুমতি চান যেহেতু জাদুঘর হতে জাহাজঘাটা একটু দূরে তাই জাহাজঘাটা গেটের চাবি নিয়ে যেতে ৫ মিনিটের মতো সময় অতিবাহিত হলে। তালা খুলে দেয়া পর তারা ভিতরে প্রবেশ করে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বাপ্পি মিয়া কে এলোপাথারিভাবে মারধর করেন ও বলেন চাবি নিয়ে আসতে দেরি হয় কেন এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথার কাটাকাটি ও ধাক্কা ধাক্কি হয়। মারধর শেষে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা স্থান ত্যাগ চলে যায় বলে জানা যায়। এঘটনায় ফোনে মহাস্থান জাদুঘরে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীগনকে চাকুরিচ্যুত করা সহ বিভিন্ন ধরণের হুমকি প্রদান করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির কর্মীরা।
উল্লেখ্যত দুর্বৃত্ত কতৃক দু-তিন মাস আগে একই স্থানে অর্থাৎ মহাস্থান জাদুঘরের জাহাজঘাটা কাউন্টারে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও অপরাধীদেরকে এখনো সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এখানে সিসি ক্যামেরা থাকা সত্বেও কোন নিরাপত্তা নেই পর্যটকদের। যদি এখনো কোন দুর্ঘটনা ঘটে সে ক্ষেত্রে দুষি ব্যক্তিদের সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। সেখানে থাকা সিসি ক্যামেরা কোন কাজেই আসেনা। কিন্তু সরকারি অর্থে এখানে সিসি ক্যামরা স্থাপন করা থাকলেও তা তখন নষ্ট বলে দায়িত্বরত মহাস্থান জাদুঘরের কর্মকর্তা কাস্টোড়িয়ান রাজিয়া সুলতানা বলেন।
জনসাধারণের মনে প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থানে যেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ পরিদর্শন করার জন্য পর্যটকরা আসে, সেখানে সরকার অনেক টাকা খরচ করে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করেছে অথচ সেটি আজও অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এখানে কি মহাস্থান জাদুঘরের কস্টোডিয়ানের গাফলতি নেই, না সরকারি কোষাগারের টাকা নেই সিসি ক্যামেরা মেরামতের জন্য এমনটাই প্রশ্ন জনমনে।
এ ঘটনায় শিবগঞ্জ উপজেলা শাখার সমন্বয়ক সাব্বির খান জানান আমাদের সংগঠন এখনো সংগঠিত হয়নি। তবে এঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জনায় আমাদের সংগঠনের নাম ভাঙ্গিয়ে কাজ করছে কোন এক চক্র। কিন্তু থানায় জিডি করার আগে তাদের সাথে রাজিয়া সুলতানা কোন পরামর্শ করেছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন পরামর্শ করা হয়নি। পরামর্শ করা উচিত ছিল কিনা সেগুলো আমাদের সংগঠনের কোন সদস্য কিনা না জেনেই জিডি করেছেন তাতে আমাদের সম্মানের ক্ষতি হয়েছে। অপরদিকে ওই স্থানে সিসি ক্যামেরা আছে কিনা জানতে চাইলে কাস্টোডিয়ান বলেন সিসি ক্যামেরা নেই। অথচ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে সাংবাদিক গিয়ে দেখেন সিসি ক্যামেরা রয়েছে। সাংবাদিক ছবি তোলার পরে সেই সিসি ক্যামেরাও খুলে নিয়ে যান রাজিয়া সুলতানা এমনটি কেন করলেন। নষ্ট যদি হয়ে থাকে ৫ আগষ্টের আগে ক্যামেরা নষ্ট হয়েছে আস্ত পর্যন্ত কেন ক্যামেরা মেরামত করা হয়নি।
আরো একজন সমন্বয়ক জাহাঙ্গীর আলম বলেন আমাদের সংগঠনের কোন কর্মী এর সাথে জড়িত না যদি কেউ থেকে থাকে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনার বিষয়ে মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের কাস্টোডিয়ানকে একাধিক বার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরেক্ষনে আবারও তার সাথে মুঠো ফোনে জানাতে চাইলে তিনি বলেন এবিষয়ে কোন বক্তব্য দিতে রাজি নয়,বিষয়টি নিয়ে খুবই ঝামেলায় রয়েছি পরে বক্তব্য দিবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি শাহিনুজ্জামান শাহিন বলেন এঘটনায় একটি জিডি হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।