মোঃ শাহপরান আরিফ রায়পুর লক্ষ্মীপুর
ছাত্র/ছাত্রীদের দৈহিক, মানসিক, সামাজিক, নৈতিক, মানবিক, আধ্যাত্নিক, নান্দনিক প্রান্তিক যোগ্যতম করে গড়া তোলাই আখতার খান’র লক্ষ্য। শিক্ষক আখতার হোসাইন খান ঐতিহ্যবাহী খান পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। ১৯৯৯ সালে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরবংশী জয়নালীয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১ম বিভাগ নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা,২০০১ সালে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, ২০০৫ সালে বিএসএস (4yr)অনার্স, ২০০৬ সালে এমএসএস(রাবি) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধীনে ডিগ্রী লাভ করেন। ঢাকা থাকাকালীন ছাত্রাবস্থায় ঘাসফুল আর্ট স্কুল, মনিপুর স্কুলে পার্ট টাইম ক্লাশ নেন এবং বিসিকের স্কিটির অফিস ম্যানেজমেন্ট কোর্স সম্পন্ন করেন।
২০০৮ এর ২৮ শে ডিসেম্বর এর নির্বাচনের সময় থেকে তার গ্রামে থাকা শুরু। নিজের ইচ্ছায় ২০০৮ সালে নব্য প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হায়দরগঞ্জ মডেল কলেজে প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতায় যোগ দেন। যোগদানের পর পরই নিজের যোগ্যতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করতে থাকেন। প্রতিষ্ঠানকে কিভাবে দাঁড় করানো যায় কিভাবে শিক্ষার আলো সর্বস্তরে পৌঁছে দেওয়া যায় সে জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা শুরু করেন। মুখোমুখি হন নানাবিধ চ্যালেঞ্জের।
এমপিও ভুক্ত জব ২০১১ সালের মার্চ মাসে চাপাতলী লতিফিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসায়,রহিমানগর, কচুঁয়া,চাদঁপুর এ ১০ম গ্রেডে সমাজবিজ্ঞান/ ইংরেজী বিষয়ে জব করতেন। কিন্তু সমাজ ও গ্রামের শিক্ষার উন্নয়নে তিনি সেখান থেকে নিজ গ্রামে থাকার জন্য রিজাইন দিয়ে চলে আসেন। অংশগ্রহন করেছেন শিক্ষাক্রম-২০১২,সৃজনশীল প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, পরিশোধন ও উত্তরপত্র মূল্যায়ণসহ পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন, শিক্ষা প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক, মাস্টার ট্রেইনার ( উচ্চ শিক্ষা) এইচ এস পি ই শিক্ষক প্রশিক্ষনে অংশগ্রহন করেন। ক্লাস মনিটরিং, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক,গ্রন্থাগারিক, হিসাবরক্ষণ , পরিকল্পনা ও উন্নয়ন,স্বাস্থ্য সচেতনতা , শারিরীক শিক্ষা, নিরাপত্তা কর্মী ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ ঠিক রেখে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে আগ্রহী এই শিক্ষক। আর এসএল প্রশিক্ষন সম্পন্ন এ শিক্ষক জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০১৭ সালে রায়পুর উপজেলার শ্রেষ্ঠ কলেজ শিক্ষক নির্বাচিত হন। তিনি বিশ্বাস করেন জনগনের করের টাকায় রাষ্ট্র তাঁকে পড়িয়েছে,বিনিময়ে এলাকায় তার কিছু দেওয়ার আছে।
শুধু নিজের ভাগ্য গড়ে তোলা নয়। শিক্ষক আখতার হোসাইন খান রায়পুর প্রজন্ম ফোরাম, উঃচরবংশী যুব সংঘ, ইউনিটি সামাজিক সংগঠন ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকার রায়পুর উপজেলায় সাংবাদিকতার সাথে সম্পৃক্ত, উন্নয়নমূলক সৎ সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী, আখতার হোসাইন খান সাহেব সেবামূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। পেশাগত জীবনে লেখক,সাংবাদিকতা, সমাজকর্মী, সমাজচিন্তক ব্যাক্তিত্ব। তিনি ২ সন্তানের জনক। বড় ছেলে প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী স্কুল এন্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র তামিম হোসাইন খান এবং অন্যজন মেয়ে জান্নাতুল বুশরা ক্বওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। সহধর্মিণী শারমিন আক্তার সরকারি প্রাথমিক শিক্ষিকা, জনশ্রুতি রয়েছে স্কুলের মধ্যে সেরা শিক্ষিকা। এছাড়াও তিনি একজন সুগৃহিণী । শারমিন আক্তার একজন আধুনিক শিক্ষক এবং বিজ্ঞানমনস্ক ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন মানুষ। সামগ্রিক জনগনের উপকারার্থে এবং যা কিছু ভালো সবসময় তার সাথে তিনি আছেন।
খান সাহেব এ লেখার সাথে সহমত পোষন করেন Think Globally act locally . সার্বিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত আঞ্চলিক উন্নয়ন। এলাকার উন্নয়নই তার একমাত্র ব্রত। শিক্ষাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে এর বিস্তারে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। লক্ষ্মীপুর, রায়পুরের হায়দরগঞ্জ, চরআবাবিল, চরপক্ষী, চরবংশী,চরইন্দুরিয়া, ঘাসিয়ারচর, পুরানবেড়ী, চমকাবাজার, খাশেরহাট, ইসলামগঞ্জ, চরলক্ষী, হাজিমারা, মোল্যার হাট, চরকাছিয়া, সমিতির বাজার, মিয়ারহাট, ত্রিশঘর, বালুরচরসহ সকল শিক্ষার্থীদের তিনি সুশিক্ষায় শিক্ষিত করেন। বর্তমানে প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী স্কুল এন্ড কলেজ,রায়পুর,লক্ষ্মীপুরে প্রভাষক হিসেবে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
তিনি স্বপ্ন দেখেন নীতি ও নৈতিকতার শিক্ষা দেশে বাস্তবায়ন হবে। এ দেশের শিক্ষার্থীরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ এবং জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আখতার খান সহমর্মিতা, সহনশীলতা, সামাজিক ন্যায়বিচার, ন্যায়পরায়ণপূর্ণ বিপুল সম্ভাবনাময় এমন এক বিশ্বের স্বপ্ন দেখি যেখানে দারিত্র দূরীকরণ, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন বাস্তবায়ন মূল লক্ষ্য। এ ক্ষেত্রে কলেজ তৈরী করতে বিশেষ অনেক জনের সহযোগীতা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের গঠন করার মধ্য দিয়ে এলাকার উন্নয়ন করাই এই শিক্ষকের লক্ষ্য। আখতার স্যার ছোট বেলা থেকেই চ্যালেন্জ নিতে ভালবাসেন, যেটা করব বলে প্রতিজ্ঞা করেন, সেটা করেই ছাড়েন- এমনটা বর্তমান সহকর্মীদের মন্তব্য। কোন জ্ঞানই রাজনীতি জ্ঞানের বাইরে নয়, কোন কিছু প্রতিষ্ঠা ও জাতি গঠন করা শিক্ষক ব্যক্তির জন্য সহজ। এই শিক্ষানুরাগী মনে করেন উচ্চ শিক্ষা যার,উচ্চ সম্মানও তার। যেমনটা রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এরিষ্টটল বলেছিলেন, প্রত্যেক ভালো মানুষ, ভালো নাগরিক নয় কিন্তু প্রত্যেক ভালো নাগরিক ভালো মানুষ।