মো: রবিউল হোসেন খান, খুলনা ব্যুরো :
মহান মুক্তি্যুদ্ধে আত্মদানকারী শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে খুলনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান সাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কর্মসুচি পালিত হয়েছে। দিবটি উপলক্ষ্যে সুর্যোদয়ের সাথে সাথে গল্লামারী শহীদ শহিদ স্মৃতি সৌধে পুস্পমাল্য অর্পন করা হয়। প্রত্যুষে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্যদিয়ে দিবসের সুচনা করা হয়। সুর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারি, আধাসরকারি,সায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবন ও প্রতিষ্ঠানসমুহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ও সড়ক দ্ধীপ সমুহে জাতীয় পতাকা দ্ধারা সজ্জিত করা হয়। গল্লামারী শহিদ স্মৃতিসৌধে পুস্পমাল্য অর্পন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন,বাংলাদেশ মুক্তি্যোদ্ধা সংসদ মহানগর ও জেলা ইউনিট, বিভাগীয় কমিশনার ও কেসিসির প্রশাসক মো: ফিরোজ সরকার, পুলিশের রেঞ্জ ডিআইজি মো: রেজাউল হক, কেএমপির পুলিশ কমিশনার মোঃ জুলফিকার আলী হায়দার, খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার, জেলা পরিষদের প্রশাসক, কেডিএ, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, বটিয়াঘাটা উপজেলা প্রশাসন, আইনজীবী সমিতি,বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র ছাত্র প্রতিনিধিরা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, পেশাজীবি সংগঠন এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাহিত্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সকাল ৯ টায় খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ফিরোজ সরকার। পরে একই স্থানে পুলিশ, আনসার ভিডিপি, বিএনসিসি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, কারারক্ষী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। বিভাগীয় কমিশনার প্রধান অতিথি হিসেবে কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন। পুলিশের রেঞ্জ ডিআইজি মো : রেজাউল হক, কেএমপির পুলিশ কমিশনার মোঃ জুলফিকার আলী হায়দার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, পুলিশ টিএম মোশাররফ হোসেন, বীর মুক্তি্যোদ্ধা সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাগন এসময় উপস্থিত ছিলেন। নগর ভবনে সিটি করপোরেশনের আয়োজনে শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগীতা, আলোচনা সভা ও পুরস্কার অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেসিসির প্রশাসক মো: ফিরোজ সরকার। কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কর তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কেসিসির সচিব আসিফ রহমান, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরা, প্রধান প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান, রাজস্ব কর্মকর্তা এসকেএম তাসাদুজ্জামান প্রমুখ। খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে দুপুরে বীর মুক্তি্যোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মো: ফিরোজ সরকার বলেন, বীরযোদ্ধারা আমাদের সাধীনদেশ দিয়েছেন। আর মুক্তি্যুদ্ধই আমাদের দেশ প্রেমের প্রেরনা। দেশ প্রেম হলো সুন্দরদেশ গড়ার প্রধান নিয়ামক। দেশ সুন্দর থাকলে আমারা ভালো থাকবো। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, রেঞ্জ ডিআইজি মো : রেজাউল হক, কেএমপির পুলিশ কমিশনার মোঃ জুলফিকার আলী হায়দার, পুলিশ সুপার টি এম মোশাররফ হোসেন, যুদ্ধকালীন কমান্ডার স,ম বাবর আলী, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মহানগর ইউনিটের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মাদ মনিরুজ্জামান ও জেলা ইউনিটের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবু জাফর। দিবসটি উপলক্ষ্যে সিনেমা হল সমুহে ও উন্মুক্তস্থানে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শন / প্রামান্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। হাসপাতাল, জেলাখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতীবন্ধী কল্যান কেন্দ্র, শিশুদিবা যত্ন কেন্দ্র, শিশু পরিবার ও ভবঘুরে প্রতিষ্ঠান সমুহে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হয়। জাতির শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বাদ জোহর সুবিধা জনক সময়ে বিশেষ মোনাজাত এবং মন্দির, গীর্জা,প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসানালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। ঔই দিন দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত বিআইডব্লিটিএ রকেট ঘাটে নৌ- বাহিনী র জাহাজ জনসাধারণের দর্শনের জন্য উম্মুক্ত রাখা হয়। গুরুত্বপূর্ণ সরকারী, আধাসরকারি,সায়ত্তশাসিত, বেসরকারি ভবন ও স্থাপনা সমুহে আলোকসজ্জা করা হয়। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্কুল, কলেজ, ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া টি- ২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, ফুটবল ম্যাচ ও কাবাডি) প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়। খুলনার সকল পার্ক ও বিভাগীয় জাদুঘর শিশুদের জন্য বিনা টিকিটে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত উম্মুক্ত রাখা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে খুলনা বেতার বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার এবং স্থানীয় সংবাদপত্র গুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষ্যে রাজনৈতিক দল, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন কর্মসুচির আয়োজন করে।