রুহুল আমিন চৌধুরী সুমন, কুমিল্লা।
প্রতি বছরের মতো এবারও কুমিল্লা নগরীজুড়ে ইফতার বাজার জমে উঠেছে। তবে এবারের ইফতার বাজারে যোগ হয়েছে নতুন কিছু মুখরোচক ও বৈচিত্র্যময় খাবার। বড় বড় হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলোতে ইফতারের জন্য বেশ চমকপ্রদ আয়োজন করা হয়েছে। ইরানি জলাপি, গরুর মাংসের পাকিস্তানি বিরিয়ানি, আফগানি খাসির কাবলি পোলাও, খাসির পা রোস্টসহ নানা রকম খাবার কুমিল্লার মানুষের ইফতার টেবিলকে রঙিন করেছে।
নগরীর কান্দিরপাড়ের জিলা স্কুল সড়ক লাগোয়া বধূয়া ফুড ভিলেজে শতাধিক ধরনের ইফতারির পসরা সাজানো হয়েছে। রেস্তোরাঁটি কুমিল্লার মানুষের জন্য পাকিস্তানি বিফ বিরিয়ানি ও আফগানি খাসির কাবলি পোলাওসহ বেশ কিছু নতুন খাবার এনেছে। ইরানি জিলাপি এখানে সবচেয়ে জনপ্রিয়। প্রতি কেজি ইরানি জিলাপির দাম ৫০০-৬০০ টাকা। এছাড়া ৭০০ টাকায় খাসির আস্ত পায়ের রোস্ট এবং ১ হাজার ৩৫০ টাকায় মাটির হাঁড়িতে রান্না করা গরুর মাংস পাওয়া যাচ্ছে।
ব্যবসায়ী আনিছুর রহমান, যিনি পরিবারের জন্য ইফতারি কিনতে বধূয়া ফুড ভিলেজে এসেছেন, জানান, আধুনিকতার সঙ্গে মানুষের রুচির পরিবর্তন ঘটছে। তাঁর পরিবার নতুন ধরনের এই ইফতারি বেশ পছন্দ করে।
অভিজাত হোটেলগুলোতে ইফতার আয়োজন
কুমিল্লার ঝাউতলার অ্যালিট প্যালেস, টমছমব্রিজের হোটেল ওয়েসিস, কুমিল্লা ক্লাব এবং কান্দিরপাড়ের গ্র্যান্ড দেশপ্রিয়সহ অন্যান্য হোটেলগুলোও ইফতারির বিশাল আয়োজন করেছে। এসব জায়গায় প্রতিদিনই ক্রেতাদের ভিড় লেগে থাকে।
ঐতিহ্যবাহী ডায়ানা হোটেলের বিশেষ হালিম
চার দশকেরও বেশি সময় ধরে জনপ্রিয় ডায়ানা হোটেলের হালিম রমজানের অন্যতম আকর্ষণ। প্রতিদিন শতাধিক কেজি হালিম বিক্রি হয় এই হোটেলে। হালিমের প্রতি কেজির দাম ৪০০ টাকা। ডায়ানা হোটেলের ব্যবস্থাপক মাহবুব আলম জানান, ক্রেতাদের মান ধরে রাখার চেষ্টা করছেন তারা।
কুমিল্লার ইতিহাসবিদ আহসানুল কবীর জানান, চার দশক আগেও কুমিল্লার মানুষের ইফতারে এত বৈচিত্র্যময় খাবার ছিল না। দই, চিড়া, কলা, খই, মুড়ি এবং ছোলাসহ সাধারণ খাবারই ইফতারের মূল অংশ ছিল। সময়ের সঙ্গে মানুষের রুচি পরিবর্তন হয়েছে এবং এখন ইফতারে নতুন নতুন মুখরোচক আইটেম যোগ হচ্ছে।
কুমিল্লার ইফতার বাজার এবার আধুনিকতার সঙ্গে ঐতিহ্যের মেলবন্ধন ঘটিয়েছে। ক্রেতাদের ভিড়ে মুখরোচক খাবারের এই বৈচিত্র্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।