জেলা প্রতিনিধি চট্টগ্রাম:
৩রা ফেব্রুয়ারী২০২৫ইংরেজী সোমবার চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলার পাইন্দংয়ে
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন পাইন্দং ইউনিয়ন শাখা'র দ্বি বার্ষিক সম্মেলন ২০২৫,পাইন্দং উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে পাইন্দং ইউনিয়ন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের আহবায়ক কমিটির সভাপতি মোঃ তাজুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে সংগঠনের সদস্য সচিব মোঃ আবদুর রহিম এর সঞ্চলনায় অনুষ্ঠিত হয়েছে,উক্ত সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সহসভাপতি শহিদুল ইসলাম,ফটিকছড়ি উপজেলার সভাপতি গাজী মোঃ বেলাল, নবীদুর হোসেন মাসুদ,লোকমান চৌধুরী,জিএম ইলিয়াস,এড. নজরুল ইসলাম, শাহনেওয়াজ আলী রিপন,ফোরকানুল আমিন, আবু তৈয়ব মুন্সি,সম্মানিত বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, দেশের ইসলামের পতাকাবাহী একমাত্র শ্রমিক সংগঠন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন। এই সংগঠন খেটে খাওয়া মানুষদের আলোর পথ দেখায়। অন্ধকার থেকে দূরে রাখে। মানুষদের শান্তির পথের সন্ধান দেয়। আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন ছাড়া দেশ থেকে বৈষম্য দূর হবে না। বৈষম্য দূর করার জন্য ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলে শ্রমজীবী মানুষরা সুখ-শান্তি ফিরে পাবে।
তিনি আরও বলেন, শ্রমিকরা কাজ করে খেতে চায়। শ্রমিকরা সংঘাত চায় না। আমরা শ্রমিক-মালিকের সুসম্পর্ক চাই। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘শ্রমিক-মালিক ভাই ভাই। তাদের এক হতে হবে। তারা বিবাদে জড়ালে সেখানে উন্নয়ন হবে না। মজুরি নির্ধারণ করে শ্রমিক নিয়োগ করতে হবে।’ কিন্তু আমাদের দেশে শ্রমিক নিয়োগের পূর্বে মজুরি ঠিক করা হয় না। আবার যেভাবে মজুরি ঠিক করা হয় সে অনুযায়ী দেওয়া হয় না। ফলে শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে কারখানায় হামলা চালায়। আমরা এইরকম পরিবেশ দেখতে চাই না। কারখানা ধ্বংস হলে শ্রমিকদের বেতনভাতা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়। আমরা চাই শ্রমিকদের অধিকার মালিকরা নিশ্চিত করবেন। তাদের বেতনভাতা সময়মত পরিশোধ করবেন। বকেয়া বেতন দিয়ে দিবেন। মালিকদের বেশি সতর্ক থাকা উচিত। কেননা রাসুল (সা.) বলেছেন, শ্রমিকদের অপরাধ দিনে সত্তরবার ক্ষমা করতে। এর অর্থ হচ্ছে, শ্রমিকরা ভুল করতে পারে। কিন্তু মালিকরা যেনো ভুল না করে। আজকে মালিকরা শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করলে দেশে আর কোনো শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি হবে না। শ্রমিকরা সুখে শান্তিতে থাকলে দেশ ভালো থাকবে। শ্রমিকরা অসন্তুষ্ট থাকলে দেশ ভালোভাবে চলতে পারবে না। শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন দেশের প্রচলিত শ্রমিক সংগঠন থেকে ব্যতিক্রম সংগঠন। দেশে বহু শ্রমিক সংগঠন আছে। যারা এদেশে মানবরচিত মতবাদ, সমাজতন্ত্র, পুঁজিবাদ, ধর্মরিপেক্ষতা ও পশ্চিমা সভ্যতা-বিধিবিধানের ভিত্তিতে রাজনীতি করতো তারাই এদেশে প্রথম ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন গড়ে তুলে। তারা পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন জুটমিল, কলকারখানায় বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের শিক্ষার্থীদের পাঠিয়ে ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে তুলে। যাদের টার্গেট ছিল এদেশ থেকে ইসলামকে উৎখাত করে নাস্তিক্যবাদ প্রতিষ্ঠা করা। স্বল্প শিক্ষিত মানুষদের ভুল বুঝিয়ে সমাজতন্ত্রের আদলে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য তারা উদগ্রীব ছিল।
সম্মানিত বক্তারা আরো বলেন, সমাজতান্ত্রিক কমিউনিষ্টদের অপতৎপরতা রুখে দিতে এদেশের ইসলাম প্রিয় মুরুব্বিরা ১৯৬৮ সালে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন প্রতিষ্ঠা করে। ১৮ কোটি মানুষের অর্জিত স্বাধীনতা কেউ যাতে আবার কেড়ে নিতে পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। শ্রমিক কল্যাণের নেতাকর্মীদের টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত প্রতিটি জেলা-উপজেলায় পাহারা দিতে হবে। এই সময় এতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন,বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির এর জেলা, উপজেলা,বিভিন্ন ইউনিয়ন, স্থানীয় নেতা কর্মী সহ অত্র পাইন্দং এলাকার শ্রমিক, পেশাজীবী, মেহনতী জনসাধারণ বৃন্দ প্রমুখ।