মোঃ জান্নাতুল নাঈম বগুড়া শিবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
শিবগঞ্জ উপজেলায় ১২ নং রায়নগর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড এর বাংলাদেশ জামাতে ইসলামী উদ্দ্যোগে ২৯শে জানুয়ারি বুধবার মাগরিবের নামাজ শেষে
সেকেন্দ্রাবাদ জিগাতলা নুরন আলা নুর জামে মসজিদে মেরাজের সম্পর্কে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন, মাওঃ মোঃ ফজলুর করমি।
উক্ত সভায় তিনি বাংলাদেশ জমায়াতে ইসলামী রায়নগর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সভাপতি হিসাবে বলেন, ইসলামকে আমাদের মনে প্রানে বিশ্বাস করতে হবে, বিগত ১৬-১৭ বছর আমরা কেউ ইসলামের কথা বলতে পারিনি। তাই আমাদের সবাইকে ইসলামের পথে আসতে হবে। ইসলামের বিধান মেনে চলতে হবে। আজ বাংলাদেশর জনগণ নানাবিধ হক হতে বঞ্চিত। মেরাজের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে। প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সাথে মিরাজ করার সুযোগ পাচ্ছি। সুতরাং নামাজ সঠিক ভাবে আদায় করতে হবে।
উক্ত সভায় প্রধান আলোচক হিসাবে বক্তব্য রাখেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও নায়েবে আমীর বগুড়া শহর বাংলাদেশ জমায়াতে ইসলামী আলহাজ্ব মাওঃ মোঃ আলমগীর হোসেন তিনি, মেরাজের ১৪ দফা আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, মিরাজ’ রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর বিশেষ মুজিজা এবং আল্লাহর কুদরতের মহানিদর্শন। মিরাজের আলোচনায় বর্ণিত ১৪ দফার অন্যতম একটি দফা হচ্ছে, অন্যায় ভাবে কাউকে হত্যা করা যাবে না।আজ বাংলাদেশে জায়ামাতের কেন্দ্রীয় জাতীয় নেতৃবৃন্দকে বিচারের নামে সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবে এই জালিম সরকার হত্যা করেছে। আল্লাহ অবশ্যই এর সঠিক বিচার করবেন ইনশাআল্লাহ। আরও একটি দফা হচ্ছে অন্যের হক নষ্ট না করা। আজ বাংলাদেশর জনগণ নানাবিধ হক হতে বঞ্চিত। মেরাজের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে। প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সাথে মিরাজ করার সুযোগ পাচ্ছি। সুতরাং নামাজ সঠিক ভাবে আদায় করতে হবে। মিরাজের আলোচনায় বর্ণিত এই ১৪ দফা ব্যক্তি পরিবার রাষ্ট্র সবখানে বাস্তবায়নের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়ার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
মহানবী (সা.) মিরাজ থেকে ফিরে আসার পর সুরা বনি ইসরাঈলের মাধ্যমে ১৪টি দফা মানুষের সামনে পেশ করেন। বর্তমান সময়ে ক্ষয়ে যাওয়া সমাজ সংস্কারে এই ১৪ দফা বিশেষ ভূমিকা রাখবে। যেমন—
১. আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা যাবে না।
২. মা-বাবার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করতে হবে। আল্লাহ বলেন, “…মা-বাবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করো। তাঁদের একজন বা উভয়ে বৃদ্ধ অবস্থায় যদি তোমাদের সামনে উপনীত হয় তাহলে তাঁদের সঙ্গে উহ শব্দটি পর্যন্ত কোরো না। তাঁদের ধমকের সুরে জবাব দিয়ো না; বরং তাঁদের সঙ্গে মর্যাদাসূচক কথা বলো। তাঁদের সামনে বিনয়ী থেকো আর দোয়া করতে থাকো—‘হে আমার প্রতিপালক, তাঁদের প্রতি তেমনি দয়া করো, যেমনি তাঁরা শৈশবে আমাদের লালন-পালন করেছেন।’”
(সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ২৩-২৪)
৩. নিজ কৃতকর্মের জন্য আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে।
৪. আত্মীয়-স্বজনকে তাদের অধিকার দিয়ে দিতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘আত্মীয়-স্বজনকে তাদের অধিকার দাও। আর মুসাফিরদের হক আদায় করো। (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ২৬)
৫. অপব্যয় করা যাবে না।
৬. মানুষের অধিকার আদায়ে ব্যর্থ হলে বিনয়ের সঙ্গে তা প্রকাশ করতে হবে। ছলচাতুরি ও প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া যাবে না।
৭. ব্যয়ের ক্ষেত্রে বেহিসাবি হওয়া যাবে না। আবার কৃপণতাও প্রদর্শন করা যাবে না।
৮. সন্তানদের হত্যা করা যাবে না। এটি মহাপাপ।
৯. জেনা-ব্যভিচারের কাছেও যাওয়া যাবে না, কেননা এটি নিকৃষ্ট ও গর্হিত কাজ।
১০. কোনো প্রাণীকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা যাবে না। কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হলে তার উত্তরাধিকারীকে এই অধিকার দেওয়া হয়েছে যে সে চাইলে রক্তের বিনিময় চাইতে পারে। তবে প্রতিশোধের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করা যাবে না।
১১. এতিমের সম্পদের ধারেকাছেও যাবে না।
১২. ওজনে কম দিয়ে মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না। দাঁড়িপাল্লা সোজা করে ধরবে হবে।
১৩. যে বিষয়ে জ্ঞান নেই সে বিষয়ে মতামত দেওয়া অন্যায়। চোখ, কান, অন্তর সব কিছুই কিন্তু একদিন জিজ্ঞাসিত হবে।
১৪. জমিনে দম্ভ সহকারে চলা যাবে না। এগুলো সবই মন্দ ও ঘৃণিত কাজ।এই ১৪ দফাই মিরাজের প্রকৃত শিক্ষা।
উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন, উক্ত মসজিদের খতিব মোঃ ওমর ফারুক হোসেন ৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ মোহাসিন আলী, ইউনিয়ন আমির মাওঃ এবি এম ইউনুস আলী, রায়নগর ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক মুনছুর আলী। হাফেজ মাওঃ মোঃ হারুনুর রশীদ, ওলামা সভাপতি রায়নগর ইউনিয়ন, সেকেন্দ্রাবাদ ডি এস দাখিল মাদ্রাসা সহ সুপার মোঃ আব্দুল মতিন ও ৪ নং ওর্য়াড বাইতুল মাল মোঃ শফিকুল ইসলাম, আব্দুল ওহাব সহ উক্ত সভায় বাংলাদেশ জামায়াতের ইসলামী অনান্য নেতা কর্মিরা উপস্থিত ছিলেন।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:০১৯৬৮৫২৫৮৭৭