জুবায়ের রহমান ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি
ঝিনাইদহে সার্টিফিকেট মামলায় আসামী হয়ে শত শত কৃষক হয়রানী হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এক লাখ টাকার নিচে ঋন পরিশোধ করতে না পারায় কৃষকদের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়েছে। তবে এসব মামলা নিস্পত্তিতে দীর্ঘসুত্রিতা ও বছরের পর বছর চলার কারণে দরিদ্র কৃষকরা চরমভাবে ভোগান্তিতে পড়েছেন। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহে ৭৭০ কৃষকের নামে ঝুলছে সার্টিফিকেট মামলার খড়গ। মামলার কারণে অনেক কৃষক হতাশাগ্রস্থ হয়ে এনজিও’র কাছ থেকে নতুন করে আবার ঋন নিয়ে ব্যাংকের দেনা পরিশোধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। ঝিনাইদহ জেনারেল সার্টিফিকেট অফিসারের দপ্তর সুত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ঝিনাইদহের ৬ উপজেলার ৭৮৭ জন কৃষকের নামে সার্টিফিকেট মামলা করা হয়। এসব কৃষকের কাছে ব্যাংকের মোট পাওয়ানা ৬ কোটি ৮৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা। ১৭টি মামলা নিস্পত্তির মাধ্যমে টাকা আদায় হয়েছে ৮ লাখ ১৫ হাজার। ঋন গ্রহনকারী কৃষকরা বছলেন, কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের দাম না পাওয়া ও বৈশিক অর্থনীতির মন্দার কারণে তারা আর্থিক ভাবে সচ্ছল হতে পারছেন না। এ কারণে তারা ব্যাংকের দেনা পরিশোধ করতে না পেরে মামলায় জড়াচ্ছেন। ফলে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রনী ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, বিআরডিবি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মামলায় আসামী হয়েছেন। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেনারেল সার্টিফিকেট অফিসার ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার নিরুপমা রায় নওসীনা আরিফ ব্যাস্ত থাকায় কথা বলতে চাননি। ঝিনাইদহের মানবাধিকার কর্মী ও সিনিয়র সাংবাদিক অধ্যক্ষ আমিনুর রহমান টুকু বলেন, মামলা কোন সমাধান নয়। মামলা দেখে কৃষকরা ভয় পান। কারণ কৃষকরাই আমাদের অর্থনীতির মৃল চালিকা শক্তি। তিনি বলেন, কৃষি ঋন আদায়ের ক্ষেত্রে কার্যকর বিকল্প ব্যবস্থা খুজে বের করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি সায়েদুল আলম জানান, দরিদ্র কৃষকের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে ব্যাংকগুলো যতটা তৎপর, ঠিক ততটাই নিক্রিয় বড় বড় ঋণখেলাপির কাছ থেকে টাকা আদায়ে। তিনি জানান, ঋণ আদায়ে এমন বৈষম্য কাম্য নয়। কৃষকদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে হয়রানী বন্ধ করা উচিৎ বলেও তিনি মনে করেন।