আমিরুল ইসলাম জীবন ফুলবাড়িয়া উপজেলা প্রতিনিধি
ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে ময়মনসিংহের দোলমা অঞ্চল। শীতের মৌসুমে কুয়াশা নতুন নয়, তবে এবারের তীব্রতা জনজীবনকে স্থবির করে তুলেছে। দিনের পর দিন সূর্যের দেখা না মেলায় কৃষি, পরিবহন এবং শ্রমজীবী মানুষের কাজকর্ম প্রায় অচল হয়ে পড়েছে।
কৃষকরা বলছেন, সূর্যের অভাবে ফসলের গুণগত মান ও ফলন উভয়ই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে সরিষা, গম, আলু এবং শীতকালীন সবজির চাষে বড় ধরনের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। “এই পরিস্থিতি যদি চলতে থাকে, আমাদের ফসল ঘরে তুলতে পারবো কিনা, জানি না,” বললেন এক হতাশ কৃষক।
কুয়াশার ঘনত্ব এত বেশি যে ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত রাস্তার দৃশ্যমানতা প্রায় শূন্যে নেমে আসে। ফলে পরিবহন কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দূরপাল্লার গাড়ি ছাড়াও স্থানীয় যানবাহন চলাচলে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। যাত্রীরা জানান, দুর্ঘটনার আশঙ্কায় অনেক চালক রাস্তায় গাড়ি নামাতে চাইছেন না।
দোলমার শ্রমজীবী মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন। কুয়াশার কারণে বাইরে কাজ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। একজন দিনমজুর বলেন, “বাইরে কাজ করতে না পারলে আমাদের পেটে ভাত জুটবে না। এই কুয়াশা যেন আমাদের জীবিকা কেড়ে নিচ্ছে।”
ঠাণ্ডা আবহাওয়ার কারণে শিশুরা নানা ধরনের শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে। শিক্ষকেরা বলছেন, দীর্ঘদিন এমন অবস্থা চলতে থাকলে শিক্ষার উপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম হাতে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। তবে এলাকাবাসী আরও দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।
দোলমার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারি সহায়তা জরুরি। বিশেষত কৃষি খাতে আর্থিক অনুদান এবং দরিদ্র মানুষের জন্য ত্রাণ কার্যক্রম আরও জোরদার করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
সরকারি উদ্যোগ এবং স্থানীয় জনগণের একসঙ্গে কাজের মাধ্যমেই দোলমা আবার তার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।