1. news@www.provatibangladesh.com : বাংলাদেশ : দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ
  2. info@www.provatibangladesh.com : দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ :
বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ০৯:৩৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
মণিরামপুরে মিডল্যান্ড ব্যাংকের এজেন্ট শাখার উদ্বোধন হাইওয়ে মহাসড়কের বেহাল অবস্থা কে নিবে দায়ভার সিটি কর্পোরেশন নাকি প্রশাসন আনোয়ারায় শ্রী শ্রী লোকনাথ ধাম মন্দিরে দুর্ধর্ষ চুরি দুর্গাপুরে সরকারী জমি যর দখলের অভিযোগ নিরাপত্তাহীন সৈকতে আর প্রাণহানি নয়: পর্যটনের নামে গাফেলতির মূল্য কে দেবে:- প্রতিবাদে সোচ্চার স্বেচ্ছাসেবীরা ৯ নং রানাগাছা ইউনিয়নে লটারির মাধ্যমে ভিডব্লিউবি এর তালিকা প্রস্তুত রেলের জিএম’র সাথে পাবনা জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডলের সাক্ষাত বিভিন্ন দাবী পেশ টাঙ্গাইলে মেডিক্যাল হোস্টেলে মিললো ছাত্রীর ঝু”ল”ন্ত ম”র”দে”হ সাতক্ষীরা দেবহাটায় নির্বাচনে কেন্দ্র পরিচালক ও পোলিং এজেন্টের প্রশিক্ষণ কর্মশালা মুন্সীগঞ্জে নিজের দুই মেয়েকে পুকুরে ফেলে হত্যার দায় স্বীকার করলেন মা

গল্প: প্রভাতীর পথে

আমিরুল ইসলাম জীবন 
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ১১০ বার পড়া হয়েছে

গল্প: প্রভাতীর পথে

কলমে:- আমিরুল ইসলাম জীবন 

১. সূচনা

ময়মনসিংহ জেলার একটি ছোট্ট গ্রাম দোলমা। চারদিকে সবুজ ধানখেত, পাখির কূজন, আর মাটির ঘরের পরিপূর্ণ শান্তি। এখানেই থাকেন আমিরুল ইসলাম । পঞ্চাশোর্ধ্ব এই মানুষটি তার গ্রামের মানুষের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। পেশায় সাংবাদিক হলেও তার পরিচয় গ্রামের ন্যায়বিচারক হিসেবে।

তার বাড়ির বারান্দায় পুরনো কাঠের ডেস্ক, টেবিলের ওপর ঢাউস সব বই আর কালির দোয়াত। এখানে বসেই তিনি “দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ” পত্রিকার জন্য তার প্রতিবেদনগুলো লেখেন। এই পত্রিকাটি তার কাছে শুধু একটি কাজের মাধ্যম নয়, বরং এটি তার নীতির প্রতিচ্ছবি।

একদিন সকালে প্রভাতী বাংলাদেশের সম্পাদক তাকে ফোন করে জানালেন, “আমিরুল সাহেব, আপনার গ্রামেই নাকি বড় ধরনের একটি দুর্নীতি হয়েছে। বিষয়টি অনুসন্ধান করা জরুরি।”

আমিরুলের চোখ জ্বলজ্বল করে উঠল। তিনি জানতেন, তার কলমের কালি কোনোদিন মিথ্যার সঙ্গে আপস করেনি। এবারও করবে না।

২. অভিযোগের সূত্রপাত

অভিযোগ উঠেছে, গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট খালটি পুনর্নির্মাণের জন্য সরকারি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু খালের কোনো উন্নতি হয়নি। বরং খাল এখন শুকিয়ে গেছে, আর গ্রামের কৃষকেরা সেচের জন্য হাহাকার করছে।

গ্রামের প্রবীণ মুরব্বি মোতালেব হোসেন জানান, “আমরা দেখেছিলাম কিছু মেশিন এনে কয়েকদিন কাজ করল। তারপর আর কিছু হয়নি। কিন্তু শুনেছি সরকারি কাগজপত্রে দেখানো হয়েছে পুরো কাজ শেষ।”

৩. অনুসন্ধানের শুরু

আমিরুল তার পুরনো সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন। প্রথমে গেলেন খালের কাছে। তিনি দেখলেন, খালের মাটিতে বড় বড় ফাটল, কোনো পানি নেই। পাশের এক বৃদ্ধা কৃষাণী বললেন, “বাবা, আমাদের ধানের ক্ষেতে সেচের জন্য পানি লাগবে। কিন্তু এখানে কিছুই নেই। শুনেছি অনেক টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু কাজের কিছুই দেখছি না।”

এরপর তিনি স্থানীয় প্রশাসন অফিসে যান। অনেক কষ্টে একটি বরাদ্দকৃত টাকার হিসাবপত্র সংগ্রহ করলেন। তাতে দেখা গেল, কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে বলে উল্লেখ আছে। ঠিকাদার এবং স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজনের নামও তাতে উল্লেখ রয়েছে।

৪. বিপদ ঘনিয়ে আসে

আমিরুল তার অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সমস্যা দেখা দিল তখন, যখন একটি চিঠি তার হাতে এসে পৌঁছায়। চিঠিতে লেখা, “আপনার জন্য ভালো হবে যদি এই বিষয়টি এখানেই বন্ধ করেন। নয়তো আপনার এবং আপনার পরিবারের জন্য বড় ক্ষতি হবে।”

চিঠি পড়ে আমিরুল চুপ হয়ে গেলেন। কিন্তু ভেতরে ভেতরে তার সাহস আরও বেড়ে গেল। তিনি জানতেন, এই হুমকি মানে সত্যের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা।

৫. সাহসের উৎস

তার স্ত্রী সায়মা হক তার জীবনের সবচেয়ে বড় শক্তি। তিনি বললেন, “আপনি কি কখনো মিথ্যার সঙ্গে আপস করেছেন? যদি না করে থাকেন, তবে আজও করবেন না। আমরা আপনার পাশে আছি।”

আমিরুল তার স্ত্রীর কথা শুনে এক মুহূর্তের জন্যও আর দ্বিধা করলেন না।

৬. প্রতিবেদন প্রকাশ

দুই সপ্তাহের গভীর অনুসন্ধান শেষে আমিরুল একটি বিস্ফোরক প্রতিবেদন তৈরি করলেন। প্রতিবেদনে দুর্নীতির সমস্ত প্রমাণ, নথি, এবং ভুক্তভোগীদের বক্তব্য তুলে ধরেন। শিরোনাম ছিল, “খালের নামে হরিলুট: গ্রামীণ কৃষকদের বাঁচাবে কে?”

প্রতিবেদনটি “দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ” এর প্রথম পাতায় ছাপা হয়। এটি প্রকাশিত হওয়ার পর পুরো দেশে ঝড় বয়ে যায়। প্রশাসন তদন্ত শুরু করে এবং প্রমাণ মেলে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি মিলে প্রায় ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে।

৭. প্রতিক্রিয়া

গ্রামের মানুষ আমিরুলকে ঘিরে দাঁড়ায়। তারা কৃতজ্ঞতায় চোখ ভেজায়। “আপনি আমাদের কৃষকদের বাঁচিয়েছেন,” এক বৃদ্ধ কৃষক কাঁপা কাঁপা হাতে তার পা ধরতে যান। আমিরুল বাধা দিয়ে বলেন, “আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি। আমার কলম সত্যের জন্য, অন্যায়ের বিরুদ্ধে।”

৮. নতুন দিনের সূচনা

এই ঘটনার পর প্রভাতী বাংলাদেশ এবং আমিরুলের নাম একসঙ্গে উচ্চারিত হতে থাকে। গ্রামে নতুন খাল পুনর্নির্মাণ প্রকল্প শুরু হয়, এবং তা সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়।

আমিরুল জানেন, এই লড়াই এখানেই শেষ নয়। দুর্নীতির অন্ধকারে আলো জ্বালাতে তাকে আরও বহু লড়াই করতে হবে। কিন্তু তার বিশ্বাস, যতদিন “দৈনিক প্রভাতী বাংলাদেশ” এর মতো সাহসী গণমাধ্যম থাকবে, ততদিন সত্যের জয় অবশ্যম্ভাবী।শেষ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট